স্বাস্থ্যের নতুন রাঘববোয়াল ডাঃ মহসিন ফকির!

লেখক: ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১ বছর আগে

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাঃ মহসিন ফকিরের বিরুদ্ধে ডিএসএফ প্রকল্প,করোনাকালীন সময়ে সরকারের বরাদ্দ অনিয়মসহ বিভিন্ন বাজেট থেকে কোটি কোটি টাকা আত্বসাত, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ আফজাল হোসেনের ভাগ্নে পরিচয়দানকারি ডা. মহসিন ফকিরের অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারি প্রকল্পের কয়েক কোটি টাকা আত্বসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি, দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের চেয়ারম্যানের কাছে কমপক্ষে ২৭টি অভিযোগ দিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী ।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে , আফজাল হোসেন তার মামা আর স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে, বলে বেড়ান ও প্রচার করেন ডা. মহসিন ফকির । তিনি গড়ে তুলেছেন, নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী । বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে টর্চার সেল,সবই করেন তার ভাঙ্গা উপজেলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন দিয়ে। এরাই হাসপাতালের নিয়ন্ত্রক।

যেকোনো ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে হয়রানির শিকার হয়। প্রতিবাদ করলে মারধর হামলা মামলার শিকার হতে হয় ডা. মহসিন ফকির ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে । এমন উদাহরণও আছে ।

স্থানীয় শহীদুল ইসলাম, মনিরুল হক মোল্যা, মাহমুদুর রহমান তুরান নামের তিন সাংবাদিক তার দুর্নীতি অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করে ডা. মহসিন ফকিরের রোষানলে পড়েন । পুলিশের যোগসাজশে গোপন আঁতাত করে সাংবাদিকদের আটক করান । সাংবাদিকের নামে আইসিটি আ্যাক্টে মামলা দেন । দম্ভ করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নিউজ করলেই মামলা করবো আইসিটি আ্যাক্টে, উপরের নির্দেশ আছে । প্রশ্ন উঠেছে উপরের গডফাদার অর্থাৎ নির্দেশদাতা কে ? স্থানীয় সাংবাদিকরাও তার মামলার ভয়ে থাকেন।

ফরিদপুরের আলোচিত আফজাল হোসেনের বদলী বাণিজ্য,তদবির, নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্বসাতের নেপথ্যে ছিলেন, টিএইচও ডাঃ মহসিন ফকির। এমন কথা ফরিদপুর ও ভাঙ্গার মানুষের মুখে মুখে। তিনি আফজালকে ডাকতেন মামা আর আফজালের স্ত্রী রুবিনা খানমকে মামী ডাকতেন । দুর্নীতির অভিযোগে তার মামা- মামী এখন কারাগারে । তারা বিদেশ পালিয়ে ছিল । সেই মামা- মামীকে দেখতে তার লোক দিয়ে কারাগারে খোঁজ খবরপও নেন ডা. মহসিন ফকির ।

জানা যায়,ডাঃ মহসিন ফকিরের মামা আফজাল হোসেন শত কোটি টাকার মালিক, ঢাকায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। বিলাসবহুল গাড়ি। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে বিপুল অঙ্কের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার স্ত্রী ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিক। সপরিবারে বিদেশ সফর করেছেন ত্রিশ বার । ডা. মহসিন ফকিরের মামা- মামীর অনুসারী । তারা এখন জেলে আছেন ।

মামা- মামীর মত পিছিয়ে নেই ডা. মহসিন ফকিরও । তিনি তার স্ত্রী, আত্বীয়- স্বজনের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন । তিনি কখনও ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বদলী হতে চান না । দাম্ভিকতার সাথে বলেন, আমাকে বদলী করার ক্ষমতা কারো নেই । বলে বেড়ান বদলী হলেও পছন্দের জায়গায় বদলী হবো । স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। এক্ষেত্রে ডিজির ক্ষমতা নেই ।

তার এই দম্ভে বিব্রত স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাক্তার বলেন, তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার ও অসদাচারণ করেছেন ডা. মহসীন ফকির । স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে নৈরাজ্য ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক্তার মহসিন ফকির বলেন, ভাঙ্গায় ১০০ টাকার সাংবাদিকের অভাব নেই, এক কলম লিখতে জানে না তারাও সাংবাদিক। অভিযোগ সব মিথ্যা। কেউ নিউজ করলেই মামলা দিবো।

এব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ খোরশেদ আলম বলেন, ডা. মহসিন ফকিরের নামে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে । প্রমাণ হলেই এ্যাকশন ।

  • স্বাস্থ্যের নতুন রাঘববোয়াল ডাঃ মহসিন ফকির!