বন্দরে বাবু হত্যাকান্ডঃ এখনও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ! 

লেখক: Shariful Islam
প্রকাশ: ২ years ago

আমাদের সংগ্রাম ডেস্ক: 
বন্দর প্রতিনিধিঃ বন্দরে বাগবাড়ি এলাকায় আলোচিত নিলয় আহমেদ বাবু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল রহস্য এখনও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। যার ফলে হত্যার রহস্য নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
তবে  এ হত্যাকান্ডে সাবেক এমপি আবুল কালামের পুত্র নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশাকেও আসামী করায় ব্যাপক সমালোচনার ঝঁড় বইছে।
একদিকে বাবুর পরিবার বলছে কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার চাপে ও হুকুমেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে কাউন্সিলর আশার সমর্থকরা বলছে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য একটি মহল রাজনৈতিকভাবে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এ ঘটনা অনুসন্ধান দেখা গেছে, বন্দরের বাগবাড়ি এলাকায় মনির মিয়ার স্ত্রী হাসিনা নামের এক নারী কিছুদিন পূর্বে একটি জায়গা ক্রয় করে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে। তবে প্রকৃতপক্ষে তার স্থায়ী ঠিকানা কোথায় তা কেউ জানে না। মুলতঃ তিনি একজন মুরগী ব্যবসায়ী।
এছাড়াও তিনি মুরগীর বিভিন্ন অঙ্গ সংগ্রহ করে বিক্রির অন্তরালে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকেন বলে জানা যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ এপ্রিল রাতে বাগবাড়ীতে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের এক যুবকের সাথে হাসিনা বেগমকে আপত্তিকর অবস্থায় একজন যুবক দেখতে পেয়ে বাবুকে ফোন দেয়। বাবু ও তার বন্ধুবান্ধবরা এসে ওই যুবকমহ হাসিনাকে আটক করে। পরে লোকলজ্জার ভয়ে হাসিনা বেগম ঘটনা আড়াল করতে ৪০ হাজার টাকা বাবুসহ স্থানীয় যুবকদের হাতে তুলে দেয়। পরে তারা চলে আসে। এরপর হাসিনা ও পার্শ্ববর্তী সহযোগী আমিনুল মিলে এই ঘটনাকে সুত্র ধরে বাবুর বিরুদ্ধে নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কায়সার আশার কাছে নালিশ করে। পরে বাবুকে ধরে আনতে কাউন্সিলর কাউছার লোক পাঠায়। বাবু কাউন্সিলর অফিসে আসতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের অফিসে বিচার হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এতে কাউন্সিলর আশা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই অভিযোগকারী মহিলাকে থানায় পাঠিয়ে দেয় এবং বাবুর বিরুদ্ধে মনগড়া সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা পাওনাসহ চুরির একটি অভিযোগ করে। ওই অভিযোগটি তদন্ত করার দায়িত্ব পান বন্দর ফাঁড়ীর এসআই রওশন ফেরদৌস।
গত ২৮এপ্রিল পরে কাউন্সিলর আবুল কায়সার আশার নির্দেশনা পালন করতে দ্রুত এসআই রওশন ফেরদৌস তদন্তের নামে বাগবাড়ী তার বাদী হাসিনা বেগমের বাড়িতে যায় এবং মোটা টাকা উৎকোচ নিয়ে বাবু বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করেন। বাবুকে না পেয়ে তার মাকে শাসিয়ে চলে আসে। পরেরদিন বাবুকে খুজতে আবারও কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা লোক পাঠায় এবং এসআই ফেরদৌস কাউন্সিলর মিমাংশা করবে বলে বাবুকে ফোনে থ্রেট করেন। কাউন্সিলর আশা নিজে ও লোকজনদের দিয়ে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১লা মে কাউন্সিলর আশার নির্দেশে তার আস্থাভাজন সইক্কা, জিপু, আফজাল, সিরাজগং এসআই ফেরদৌসকে পুঁজি করে বাবুকে ধাওয়া দেয়। এ ধাওয়ায় বাবু বাগবাড়ি এলাকার একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ঝাঁপ দেয়। পরে পাশের বাড়ি ছাদ হতে কাউন্সিলর আশার লোকজনেরা তাকে ইট পাটকেট নিক্ষেপ করে। সম্ভবত ওই আঘাতেই বাবু মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে বলে জানায় স্থানীয়রা।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, ঘটনার আগে ও পড়ে কাউন্সিলর আশা তার পরিবারের লোকজনদের বলেছেন ছেলেকে কাউন্সিলর অফিসে পাঠাবেন না হয় ওকে ধরে নিয়ে আসা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল নিখোঁজ হয় বাবু। পরে তার মা লিলি বেগম গত ২রা মে  থানায় নিখোজ জিডি এন্টি করেন। ৪দিন পর বুধবার বিকালে ডোবায় তার মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। এ খবর পেয়ে  পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত লাশ  উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেন।
  • বন্দরে বাবু হত্যাকান্ডঃ এখনও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ!