নির্বাচনী রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ নিয়ে বন্দরের ত্যাগী নেতাদের প্রতিক্রিয়া

লেখক: Shariful Islam
প্রকাশ: ২ years ago

আমাদের সংগ্রামঃ  ইউনিয়ন পরিষদ ও নাসিক নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে নতুন মাত্রা ও সমিকরন শুরু হয়েছে। দিন যত সামনে আসছে, নির্বাচনী রাজনীতি ততই নতুন মাত্রা পাচ্ছে। হঠাৎ করেই রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মেরুকরণ। বদলাচ্ছে রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা। নানা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-এই নির্বাচনী রাজনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে না থাকলেও নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ । কে, কাকে, কোন কৌশলে পেছনে ফেলে পার হবে নির্বাচনী বৈতরণী; সে নিয়ে যেমন রয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ, সমীকরণ; তেমনি জয় নিশ্চিত করতে কাকে নিয়ে কোন পথে এগোলে সফলতা আসবে-ভাবতে হচ্ছে তা নিয়েও।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে। দল ক্ষমতায় থাকায় সরকার পরিচালনায় প্রতিদিনই নানা চ্যালেঞ্জ যেমন সামাল দিতে হচ্ছে তাদের, তেমনি নির্বাচনী রাজনীতিতে নিতে হচ্ছে নানা উদ্যোগ ও কৌশল। ফলে গত কয়েক দিনের রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে দলের মধ্যে।

গেলো বছরের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়নগঞ্জের ১৬ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পর থেকেই অনেকটা পরিবর্তনের আভাস লক্ষ্য করা গেছে । নাসিক নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সতর্ক ছিল ক্ষমতাসীন দল । নাসিক নির্বাচন সামনে রেখে উভয় বলয় গোপনে নতুন নতুন জোট গঠনের রাজনীতিতে। অবশ্য সেদিক থেকে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় না থেকেও নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী পুনরায় মেয়র হয়েছেন । এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ লড়ে চড়ে বসছেন উভয় বলয়। জোটের ব্যাপারে দলটি ক্ষমতাসীনদের মতো সতর্কভাবে সামনে এগোলেও সরকারের সমালোচনায় মুখর দলের শীর্ষ নেতারা।
বসে নেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন বড় দুই জোটের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলোও। তাদের মধ্যেও চলছে নির্বাচনের নানা হিসাব-নিকাশ। শুরু হয়েছে জোট গঠনের উদ্যোগ। বড় দুই জোটের বাইরে নির্বাচনী মাঠে নিজেদের শক্তির জানান দিতে বিশেষ কৌশলে এগোচ্ছে তারাও। অন্তত তিনটি প্লাটফর্মে এসব রাজনৈতিক দল পৃথক জোট গঠনের চিন্তা করছে। সবার উদ্দেশ্য ক্ষমতার ভাগাভাগির দরকষাকষি। তবে সে পথ কি হবে-এককভাবে, নাকি বড় দুই জোটের ছায়া হয়েই ভোটের মাঠে লড়বেন তারা; সে নিয়েও চলছে নানা সমীকরণ ও হিসাব-নিকাশ। এজন্য গোপনে ও প্রকাশ্যে চলছে দফায় দফায় বৈঠক।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ও রাজনীতির হালচাল পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচনী রাজনীতির এমন চিত্র ওঠে এসেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই তৃতীয় রাজনৈতিক জোট গড়ার উদ্যোগকে ভালো চোখেই দেখছেন। তাদের মতে, এই নতুন জোটের সঙ্গে সম্পৃক্তরা রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবান মানুষ। রাজনৈতিক উদ্দেশের বাইরে তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকার কথা নয়। তাদের দ্বারা জাতীয় রাজনীতি বা নির্বাচনে কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

রাজনীতি এক থিওরিতে চলে না : খান মাসুদ
রাজনীতিতে উত্থান-পতন থাকবে, কারণ রাজনীতি কখনো একই থিওরি মেনে চলে না এমন দাবী কারানির্যাতিত যুবলীগ নেতা খান মাসুদের । তবে জোটের রাজনীতি সব সময় প্রাসঙ্গিক বলে মনে করছেন এ নেতা। জোটের রাজনীতি কখনোই গুরুত্ব হারাবে না। জোট হয় আদর্শগতভাবে, শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক নয়। সমমনা দলগুলো নিয়েও জোট হয়। আগেও জোটের রাজনীতি প্রাসঙ্গিক ছিল, বর্তমানেও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

এ বিশয়ে বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা ও স্বাধীনতা স্বপক্ষের শক্তির প্রতি অনড় শাহাদাত হোসেন বলেন, গণতন্ত্রের শত ফুল ফুটছে, ভালো তো। জোট হবে, নয়া মেরুকরণ হবে-এটাই রাজনীতির নিয়ম। এটা হতে থাক, অসুবিধা কী? নির্বাচন সামনে রেখে যা হচ্ছে তা ভালো দিক। তবে শেষ পর্যন্ত এ মেরুকরণ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে।

ছাত্রলীগ নেতা শাহীন তাহেরী সিনহা বলেন,নির্বাচনের আগে নতুন নতুন জোট হওয়া ইতিবাচক রাজনীতির লক্ষণ। এসব জোট যতটা না আদর্শগত, তারচেয়ে বেশি কৌশলগত। তবে ভোটের রাজনীতিতে এদের গুরুত্ব রয়েছে।

যুবলীগ নেতা ফারুক প্রধান বলেন, প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে দুর্নীতির গ্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। জনগণ দেশের শক্তি। মনে রাখতে হবে, জুজুর ভয় দেখিয়ে জনগণের মুখ বন্ধ রাখা যায় না। রাজনীতির আদর্শ হবে জনগণের কল্যাণ সাধন করা।

ফয়সাল কবির আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বলেন, রাজনীতিবিদরা মানুষের সেবায় একমনে এগিয়ে আসবে। দুর্দিনে তাদের সততা ও দক্ষতা দিয়ে রাজনীতি টিকিয়ে রাখবে। দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে মেধাবী রাজনীতিবিদরাই। তরুণ মেধাবীদের দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। রাজনীতির পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী তরুণরাই জনগণের চাহিদা পূরণ করতে পারে বলে বুকে শত যন্ত্রণা জমা রেখেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান শাহাদাত হোসেন সক্রিয় । ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে সূচনা হলেও কোনদিন পদ পদবীর রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। সংগঠন গতিশীল করতে গিয়ে বিএনপি – জামায়াতের আগ্রাসন ৩/ ৪ বার কারাগারে গিয়েও আদর্শ হতে একটুও সরেননি। শাহাদাত হোসেনের পারিবারিক ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে। যার ফলশ্রুতিতে পুরো পরিবারকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়ে। একইভাবে নতুন কৌশলে এগোচ্ছে বিএনপিও।

  • নির্বাচনী রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ নিয়ে বন্দরের ত্যাগী নেতাদের প্রতিক্রিয়া