চোরে চোরে সালা দুলাভাই,তাহলে আমরা কে?

লেখক: হোসেন মনির
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

থু থু ওপরে নিক্ষেপ করলে নিজের গায়েই পড়ে! জীবনে একথাটি প্রথম শুনেছিলাম যখন ক্লাস ফাইভ-সিক্সে পড়ি! ব্যাপারটি আমার কাছে বিশ্বাস যোগ্য হচ্ছিলোনা! এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ভাবার পর সিদ্ধান্ত নিলেম আমাকে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা উচিত! কাউকে না জানিয়ে একা একাই পরীক্ষা সেরে ফেললাম! প্রিয় পাঠক, পরীক্ষার ফলাফল কি খুব বেশী জানতে ইচ্ছে করছে? তাহলে জেনে নিন,আমি যখন থুথু ওপরে নিক্ষেপ করেছি থুথুর সাথে কিছু কফও ছিলো! ওপরে নিক্ষেপ করে পালাতে পারিনি-যা হবার কপালের ওপরেই ঘটেছে! আমি গভীরভাবে বিষয়টিকে বিশ্বাস করেছি। আপনারা নিশ্চয়ই আমার মতো বোকা নন?

আমাকে দু’টি কথা খুব বেদনা দেয়। এক, আমার জীবনের খুবি প্রিয় এক মানুষ আমায় বলেছিলো,“তোমাকে ভালো করতে এসে আমি নিজেই খারাপ হয়ে গেলাম”!

দুই, একজন অসুস্থ কিডনি রোগী বলেছিলো,“তোমরা খালী বলো ওটা-এটা খাওয়া যাবে না,কিন্তু আমার ঘরেতো কোন খাবার নেই মানুষ যা দেয় আমাকেতো তাই খেতে হয়”! অর্থাৎ বাস্তবতা বড়ই কঠিন ও নির্মম! খুব আশাজাগানিয়া কথাটি হলো, “মনোবল হারাবেন না-এ আঁধার কেটে যাবে”…জননেত্রী শেখ হাসিনা।

বাঙালী জাতির জনকের হত্যার পর তাঁর শেষ নিঃশ^াসের সাথে অনেক দুঃখের কথা ভাবনা ছিলো যা তিনি বলতে পারেননি আমরা জানিনা তবে অনুমান করতে পারি। তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রি আমাদের বাঙালী জাতি আর বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে গিয়ে যদি কখনো আক্ষেপ করে বলে ওঠেন,“তোমাদের ভালো করতে এসে আমিই খারাপ হয়ে গেলাম”! তখন কি উত্তর দেবেন? অলরেডি তিনি বলে ফেলেছেন,“আমি যদি কাফনের কাপড় দেই তা দিয়ে কিছু লোক পাঞ্জাবী বানাবে”!
ওপরে থুথু নিক্ষেপের কথা কেন বলেছি?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রি বলেছিলেন,“সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসেব দিতে হবে এবং বহু দিন থেকেই বলে আসছিলেন,“দূর্ণীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স”! এ দুটি কথা আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতারা তাঁদের নেত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে সংসদ ভবন বা মাঠ ঘাট গরম করেছেন? প্রিয় পাঠক, দু’একজনের নাম বলবেন কি? কোন কোন নেতারা-এমপিরা তাঁদের বিশাল বাহিনী নিয়ে রাজপথ গরম করেছেন,“দূর্ণীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই-শেখ হাসিনার ভয় নাই”! কেন এ মিছিল হয়নি? কেন বঙ্গবন্ধুকন্যার মনোবলকে চাঙ্গা করা হয়নি? কারণ বঙ্গবন্ধুর চোরের খনির বাহিরেতো আমি না! দ্রব্যমুল্যের ঊর্দ্ধগতি-পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধিসহ আরো নানাবিধ দূর্ণীতির বিরুদ্ধে জনগনকে সাবেক প্রেসিডেন্ট জনাব,আব্দুল হামিদ বলেছিলেন,সামান্য কিছু দূর্ণীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনার কেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন না? কারন,জনগন রাজনীতিবিদদের-প্রশাসনি কর্মকর্তাদের হাতে জিম্মী! পরিবহন-বাজার-আড়ৎ-স্কুল-কলেজ-মাদ্রসা রাজনীতিবিদদের হাতে জিম্মী! বাংলাদেশের দূর্ণীতির মাতা এবং রাজপূত্র খালেদা জিয়া ও তারেকের কথা আর বলে কি হবে? পরিবহন-বাজার-আড়ৎ এসব এদেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতারা মিলে একাট্টা হয়ে ব্যাবসা করে! এরা লুটেরা! এরাই চোরে চোরে সালা দুলাভাই! এরাই ভাগ্যবান কিছু অমানুষ! এদের কাছে ধর্মের কথা বড় নয়-বড় হলো কৃত্রিম সংকট-সিন্ডিকেট তৈরী করে জনগনকে কষ্ট দেয়া! তাই আওয়ামীলীগের কিছু নেতৃবৃন্দ,প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের-ব্যাবসায়ীদের ব্যাপারে কথা বলা আর বাংলাদেশে খেয়ে পড়ে নাপাকিস্তানীদের মানসিকতা লালনকারীদের ব্যাপারে বলা মানে নিজের ওপরে থুথূ ফেলা কারণ এরা আমাদের!

প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে আমরা বিশ^বাস্তবতার নানাবিধ সমস্যার মুখোমুুখি হয়েছি- হতে চলেছি! ১৯৭১ইং সালে নাপাকিস্তান-আমেরিকা আমাদের সমাধানে আসেনি বরং আমাদের নির্বংশ ও আমাদের বাঙালী নারীদের গর্ভে যেন পাকিস্তানী সন্তান জন্ম নেয় সেজন্য আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করতে হুকুম দিয়েছিলো যেন বাঙালীদের পরবর্তী প্রজন্ম পাকিস্তানী প্রীতি মনে-রক্তে লালন করে!!!। কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রি স্বীকার করে সারা পাকিস্তানী নাগরিকদের জানিয়েছেন কিভাবে বাঙালীদের ওপর নাপাকিস্তানী সেনাবাহিনী আমাদের অত্যাচার করেছে এবং নাপাকিস্তানের ৯০ হাজার সৈনিক কয়েদী হয়েছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে!

স্বাধীণতা সংগ্রামে বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-পাকিস্তান থেকে পালিয়ে আসা বাঙালী সৈনিক-বাঙালী পুলিশ-রাজনীতিক-শিক্ষক-সাধারণ নারীপুরুষ-শিশু এরা সবাই গামছা লুঙ্গি পড়ে খেয়ে-না খেয়ে যুদ্ধ করে মহান আল্লাহ্র ইচ্ছায় ও রহমতে এই দেশ স্বাধীন করে। আজ যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রির নেতৃত্বে এদেশ বিশে^ জেগে ওঠে প্রথম সারির দিকে তখন সেই পরাজিত নাপাকিস্তান আমেরিকা আমাদের নানানভাবে বিপদে ফেলার জন্য ্উঠে পড়ে লেগেছে! নানান নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এবং পাকিস্তানী মানসিকতা লালনকারীরা সে সুযোগ করে দিচ্ছে! নাপাকিস্তান-চীন-আমেরিকা গোপন মিটিং করছে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলার জন্য!

এখন কথা হলো,এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিছু মাস পরেই হচ্ছে, স্বাধীণতার নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অনেক উন্নয়ণ করেছে তা আমরা সবাই জানি কিনÍু ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে এবার যদি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয় তাহলে আপনার আমার সন্তান ও তাদের ভবিষৎ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো অনিশ্চিত জীবন নিয়ে নিজ ভূমে উদ্বাস্তু হয়ে থাকবে!

এ কথা বাংলাদেশের জনগনের কাছে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে যে, “শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগ এক না! শেখ হাসিনার এদেশের সবার জন্য অনেক মেহনত করেছেন এবং তাঁকে ছাড়া এ রাষ্ট্র চালাতে বর্তমান বিশ্বাবস্তবতায় অন্য কেউ পারবেনা!
আমরা সাধারণ নাগরিকরা জানি আমাদের দেশের প্রশাসন,সরকারী কর্মকর্তা,এমপি-মন্ত্রিরা নিজেদের নিয়ে ব্যাস্ত তারা সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে তেমন ভাবেন না! তাঁদের আত্মতুষ্টির বড় অভাব! তারা আবার ক্ষমতায় আসলে হয়ত তাদের আচরণের তেমন কোন পরিবর্তন হবেনা কিন্তু তারপরও রহিমা-আছিয়া-অনিমা-শ্রাবন্তীর ধর্ষণের মতো দু লক্ষ মাবোনের ইজ্জত আর ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগকে আমেরিকা-নাপাকিস্তানদের মানসিকতা লালনকারীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে পারি না! জানি,ওরা চোরে চোরে সালা দুলাভাই কিন্তু আমরা সাধারণ সচেতন জনগন গাদ্দার-রাজাকার-মীরজাফর না। ১৯৭১ইং এর মহান স্বাধিণতা যুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করি এখনও।

  • চোরে চোরে সালা দুলাভাই
  • তাহলে আমরা কে?