স্টাফ রিপোর্টার: আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি বেশ কিছু ডাকাতির ঘটনায় জনমনে ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
এনিয়ে স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবু আড়াইহাজার থানার পুলিশকে ডাকাত গ্রেপ্তারসহ দ্রুত লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করতে চাপ প্রয়োগ করেন। এর পরও পুলিশের টনক নড়েনি। ডাকাত গ্রেপ্তারতো দূরের কথা ডাকাত দ্বারা লুণ্ঠিত একটি মালামালও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।
এতে হত্যাশ ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। বাড়িতে ডাকাতি হলেও অনেকে পুলিশি জামেলা এড়াতে ডাকাতির শিকার হয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার মামলাও করতে আসেনি। অনেকের অভিযোগ পুলিশের কাছে মামলা করতে গেলে বাড়তি জামেলা পোহাতে হয়। এতে মামলা করতে অনেকেই নিরুসাহিত হয়ে পড়েন।
ডাকাতির শিকার প্রবাসী আড়াইহাজার শিবপুর এলাকার এক ভুক্তভোগী বলেন, ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের কাছে মামলা দিতে গেলে তারা নানা ধরনের জামেলা সৃষ্টি করেন। তাই আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও মামলা করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সবচেয়ে বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের মার্চের ১ তারিখ রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বান্টি এলাকায় রুহুল আমিন ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে। এই বাড়ি থেকে ২৪ ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেওয়া হয়।
এছাড়াও নগদ লুট হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা গ্রহণ করে পুলিশ। কিন্তু এ পর্যন্ত একটি মালও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অপরদিকে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের নরিংদীবড় বাড়ি এলাকার গরু ব্যবসায়ী শরীফের বাড়িতে প্রবেশ করে ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১৩ লাখ টাকার বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
জানা যায়, রাত সোয়া একটার দিকে ১০-১২ জনের মুখোশ পরিহিত একদল অস্ত্রধারী ডাকাত নরিংদী বড়বাড়ি এলাকার গরু ব্যবসায়ী শরীফের বাড়িতে হানা দেয়। তারা একতলা ভবনের কেচি গেটের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে কক্ষে থাকা সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুস্কৃতিকারীরা আলমারীতে রাখা প্রায় ১২ লাখ টাকা, ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও অন্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
গত ৭ এপ্রিল আড়াইহাজার পৌরসভার নোয়াপাড়া এরাকায় মুরগী ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে ২৫-৩০ জনের একদল ডাকাত হানা দেয়। তারা একতলা ভবনের লোহার গেইটের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে তারা গৃহকর্তা বিল্লাল হোসেন, তার স্ত্রী রাহিমা বেগম ও দুই পুত্র বদরুজ্জামান ডালিম ও রমজানকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখায় এবং তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে। পরে তাদের হাত-পা বেঁধে ষ্টিলের আলমারি, সুকেস ভেঙ্গে নগদ ২ লাখ টাকা ও সাড়ে চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
গৃহকর্তার স্ত্রী রাহিমা বেগম জানান, ডাকাতরা চারটি কক্ষে প্রবেশ করে সকল মালামাল তছনছ করে টাকা, স্বর্ণ ও ২টি মোবাইল সেট নিয়ে যায়। গৃহকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, ডাকাতদের মুখোশ পড়া ও তাদের হাতে বড় ছোরা ও শাবল ছিল। ডাকাতরা ঘন্টাব্যাপী ডাকাতি করার পর তাদের কক্ষ হতে বের হয়ে সিএনজি যোগে চলে যায়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই অভিযোগ করেন, আড়াইহাজার থানার আশপাশে আগে কখনো ডাকাতির ঘটনা শুনেনি। কিন্তু ইদানিং ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। লুণ্ঠিত মাল উদ্ধারতো দূরের কথা। প্রকৃত একজন ডাকাতও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ । উল্টো ডাকাতি ঠেকাতে রাতে অনেক এলাকায় সাধারণ মানুষ রাত জেগে ডাকাত পাহাড়া দিতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষকেই যদি ডাকাত পাহাড়া দিতে হবে। তাহলে পুলিশের কাজ কি ? পুলিশের ভুমিকা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে।